সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কাওসার ও মিল্টন নামে সহদর দুই ভাইকে হত্যার দায়ে তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একই সাথে তাদের প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে । আজ রোববার দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ এম আলী আহমেদ এ আদেশ দেন। কাওসার ও মিল্টন উপজেলার কোদালিয়া উত্তর পাড়া গ্রামের আনতাব আলী ও হায়াতুন নেছা দম্পতির ছেলে। দণ্ডপ্রাপ্তরা মামলার বাদী হায়াতুন নেছার সম্পর্কে চাচাতো ভাই।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার কোদালিয়া উত্তর পাড়া গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে
নাছির উদ্দিন(৪০) ও শহীদুল ইসলাম (৫০), একই গ্রামের সমেশ আলীর ছেলে ইসরাফিল হোসেন (৬৫)।
আদালতের সরকারি কৌসুলি আবদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, চৌহালীর কোদালিয়া গ্রামের কাওসার ও মিল্টনের বাবা আনতাব আলীর একটি সেচ পাম্প আছে। সেই সেচ পাম্প দিয়ে তিনি এলাকায় কৃষকের জমিতে পানি দিয়ে থাকেন। দণ্ডপ্রাপ্ত শহীদুল ইসলামের জমির পাস দিয়ে একটি সেচ নালা কেটে আনতাব আলী বিভিন্ন কৃষকদের জমিতে পানি সেচ দিতেন। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসের মধ্য ভাগে জমির পাশ দিয়ে যাওয়া সেই নালা শহীদুল ইসলাম কেটে বন্ধ করে দেয় । বিষয়টি নিয়ে আনতাব আলীর দুই ছেলে কাওসার ও মিল্টন প্রতিবাদ করলে শহীদ ইসলাম তাদের দেখে নেবার এবং এর পরিনাম খারাপ হবে এমনটি হুমকি দেয় । এর পর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বেলা ৩ টার দিকে কাওসার কোদালিয়া উত্তর পাড়া গ্রামে শহীদুল ইসলামের চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলে তাকে লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া করে শহীদুল। ভয়ে কাওসার তাঁর আপন মামা আবদুস সাত্তারের ঘরে দৌড়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। এর পর মুঠোফোনে বিষয়টি তাঁর মাকে জানালে তাঁর মা তার আরেক ভাই মিল্টনকে সঙ্গে নিয়ে মামা বাড়িতে চলে আসে। তখন বেলা পৌনে চারটা বাজে। মাকে দেখে
কাওসার ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে আসলে শহীদুদলসহ অন্য আসামিরা লাঠিসোটা নিয়ে কাওসারের ওপর হামলা চালায়। তখন মিল্টন সেটি ঠেকাতে গেলে তাকেও পিটিয় আহত করে তাঁরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রাতেই একে একে তাদের দুজনের মৃত্যু হয়। পরে ৮ ডিসেম্বর নিহতের মা হায়াতুন নেছা বাদী হয়ে চৌহালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর পর ওই মামলার ১৬ জন স্বাক্ষির দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ আদালত এ আদেশ দেন।