রাজধানীর পিলখানায় ২০০৯ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে বিডিআর বিদ্রোহে যেসকল সদস্যরা চাকরিচ্যুত হয়েছিল তাদের আবার চাকরিতে পুনর্বহালসহ ৯দফা দাবি জানিয়েছে বিডিআর কল্যাণ পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগষ্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এসব দাবি জানানো হয় । এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা বরাবর লেখা চিঠি পাঠ করেন চাকরিচ্যুত জেসিও মো. ফখরুউদ্দীন।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাকুরিচ্যুত বিডিআর সদস্যগণ তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার প্রভু দেশকে স্বন্তুষ্ট করতে, সেনাবাহিনীর সামর্থ্য ক্ষুন্ন করতে বাংলাদেশ রাইফেলসকে ধ্বংস করার জন্য, প্রতিশোধ স্পৃহা থেকে এবং ক্ষমতাকে সুদৃঢ় করতে নীল নকশার অংশ হিসেবে সুপরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র পূর্বক পিলখানা হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করে। ওই হত্যাকান্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন মারা যায়। ঘটনা পরবর্তী ফ্যাসিস্ট সরকার প্রহসনের বিচারের নামে আলামত ধ্বংস ও নিরীহ ৫৪ জন বিডিআর সদস্যকে নিরাপত্তা হেফাজতে হত্যা করে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে তথাকথিত বিদ্রোহ সংজ্ঞায়িত করে ১৮৫২০ জন বিডিআর কে চাকুরিচ্যুতসহ বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করে।
সংবাদ সম্মেলনে নয়টি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হল–
১। ২০০৯ সালে ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারী বিডিআর পিলখানা সংঘঠিত সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে তথা কথিত বিদ্রোহ সংজ্ঞায়িত না করে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসাবে আখ্যায়িত করতে হবে।
২। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে গঠিত সকল প্রহসনের বিশেষ আদালত কে নির্বাহী আদেশে বাতিল করতে হবে।
৩। চাকুরিচ্যুত সকল পদবীর বিডিআর সদস্যকে সুযোগ সুবিধা সহ চাকুরিতে পুনর্বহাল করতে হবে।
৪। হত্যাকাণ্ড মামলার মহামান্য হাইকোর্টের বিচারকগণের রায়ের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী পিলখানার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মোটিভ উদ্ধার ও কুশিলবদের সনাক্তকল্পে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
৫। পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শাহাদৎ বরণকারী ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে শহীদের মর্যাদা দিতে হবে।
৬। ২৫ ফেব্রুয়ারী দিনটিকে পিলখানার ট্র্যাজেডি দিবস হিসাবে ঘোষনা করতে হবে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পরবর্তী তদন্ত/জিজ্ঞাসাবাদে নিরাপত্তা হেফাজতে যে সকল নিরীহ বিডিআর সদস্যদের নির্যাতনপূর্বক হত্যা করা হয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশ পূর্বক মৃত সকল পদবীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসন করতে হবে।
৮। তদন্ত/জিজ্ঞাসাবাদে নিযুক্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত পূর্বক বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শান্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৯। বিশেষ আদালত কর্তৃক বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ শেষকারী বিডিআর সদস্যগণ যারা প্রহসনের বিস্ফোরক মামলায় দীর্ঘ ১৬ বছর যাবৎ কারা অন্তরীণ আছে, তাদের কে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জামিন অথবা মামলা হতে মুক্ত বা অব্যাহতি প্রদান করতে হবে।